বিষয়ঃ-- শিক্ষক হিসেবে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ছাত্র হজরত উবাইব ইবনে কাব, হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত, হজরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুম।।
নবী পাক পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দুনিয়া থেকে পর্দা নেওয়ার পরে খলিফায়ে আযম সিদ্দিকে আকবর হজরত আবুবকর সিদ্দিক রাদ্বি আল্লাহু তায়ালা আনহুর খিলাফত সময় হযরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু সাধারন ভাবে ঘোষণা করেন, যারা কুরআন হিফয করেন এবং যাদের কাছে কোরআনের কোন অংশ লিখা আছে, তারা যায়েদ ইবনে সাবিত রাদ্বি আল্লাহু তায়ালা আনহুর কাছে যেয়ে তাকে তা পৌছে দেবে।
এ নির্দেশ প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথেই চামড়া, পাথর ও কাঠের টুকরা প্রভৃতিতে যার কাছে যে পরিমান ছিল, তিনি তা হযরত যায়েদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহুর কাছে জমা করেন।
জমা দেয়া শেষ হলে যায়িদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু যাচাই আরম্ভ করেন এবং হাফেযে কুরআনের সাথে মিলিয়ে তারতীব এ ধারাবাহিকতা পরীক্ষা করেন। কোন আয়াত সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণরূপে নিঃসন্দেহ না হওয়া পর্যন্ত তা লিখতেন না।
একবার হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু একটি আয়াত এরূপে পাঠ করেন :.....
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ
[সুরা তাওবা আয়াত নাম্বার ১০০]
হযরত যায়িদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু তা শােনে বলেন, والأنصار, শব্দের পরে এবং الذین শব্দের পূর্বে একটি و , অক্ষর অর্থাৎ والذین, পড়তে হবে।
হযরত যায়িদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু তা শােনে বলেন, والأنصار, শব্দের পরে এবং الذین শব্দের পূর্বে একটি و , অক্ষর অর্থাৎ والذین, পড়তে হবে।
হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু সন্দেহের মধ্যে পতিত হলেন। এরপর তিনি উবাই ইবনে কা'ব রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহুকে এবিষয়ে জিজ্ঞেস করেন।
হযরত উবাই ইবনে কা'ব রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, যায়িদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহুর কিরাআতহ শুদ্ধ, এ বলে তিনি হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহুর মন থেকে সন্দেহ দূর করে দেয়ার জন্য বলেন.....
“আল্লাহর শপথ! নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাজারে যাবার সময় আমাকে এ আযত টি শিক্ষা দিয়েছিলেন।”
এরপর হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তা'আলা নিজের ভুল সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হন।
এরূপে যে কোন সাহাবীর কিরাআত সম্বন্ধে হযরত যায়েদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর মনে সন্দেহ হত, তিনি একে উত্তমরূপে যাচাই ও পরীক্ষা করে নিয়েছেন। সম্পূর্ণরূপে নিঃসন্দেহ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তা লিখতেন না।
হযরত যায়িদ রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু এরূপে কুরআন সংকলনে এমন শ্রম ও ধৈর্যসহকারে সতর্কতা অবলম্বন করে কুরআন সম্বন্ধে ভবিষ্যতের সর্বপ্রকারের মতবিরােধের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।
সুতরাং প্রত্যেক জ্ঞানী ব্যক্তিই স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, চৌদ্দশত বছর পূর্বে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর যে কুরআন সুদীর্ঘ তেইশ বছর ধরে নাযিল হয়েছিল, তা যেরূপ নাযিল হয়েছিল, আজও তা অবিকল সেরূপই বিদ্যমান রয়েছে।
এ কারণেই খ্রীষ্টান লেখক স্যার উইলিয়াম মূর ও তাঁর গ্রন্থে লিখতে বাধ্য হয়েছেন— “আমরা জানি, দুনিয়ার এমন কোন ধর্মগ্রন্থই নেই, যা পূর্ণ বার শতাব্দী পর্যন্ত কুরআনের ন্যায় সম্পূর্ণরূপে অবিকৃত ও অপরিবর্তিতভাবে বিদ্যমান রয়েছে।”
আমাদের শিক্ষনীয় বিষয়ঃ--
(১) নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সকল সাহাবী রাদ্বি আল্লাহু তায়ালা আনহুম গন নিজেদের শিক্ষক হিসেবে মানতেন।।
(২)প্রত্যেক সাহাবী কিছু সমস্যার মধ্যে পড়লে তাদের মধ্যে যে সাহাবী যে বিষয়ে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উৎকৃষ্ট শিক্ষা অর্জন করেছিলেন তাঁর কাছে গিয়ে সমস্যা সমাধান করতেন।।
(৩)এই ঘটনা থেকে আমাদের ইমান কে মজবুতি দান করে পবিত্র কোরআন শরিফ কত হিকমতের সঙ্গে অনুলিপি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।।
(৪)এ ঘটনা থেকে হজরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বি আল্লাহু তায়ালা আনহু শাসন কার্যক্রম কত নিখুঁতভাবে পরিচালনা করেছেনে তার আভাস মিলেছে (আলহামদুলিল্লাহ)।
(৫)এ ঘটনা থেকে আমাদের এই শিক্ষা নেওয়া দরকার যে প্রতি মুহুর্তে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা প্রদান করতেন।। কখনো বাজারে রাস্তায় যেতে যেতে বা কখনো মসজিদে মিম্বারে বা কখনো ফাঁকা ময়দানের মধ্যে।।
হে মুসলিম সম্প্রদায় তোমার কি তোমাদের মুখের ভাষার দিকে খেয়াল করবেনা??
যে নবী কে শিক্ষা দান করে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দিলেন সুরা আর রহমানের মধ্যে.....
যে নবী কে শিক্ষা দান করে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দিলেন সুরা আর রহমানের মধ্যে.....
عَلَّمَ الْقُرْآنَ
তিনি(আল্লাহ্) কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন(নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে)।।
তিনি(আল্লাহ্) কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন(নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে)।।
হে মুসলিম সম্প্রদায় নিজের অন্তর কে প্রশ্ন করো...
যে নবী কে আল্লাহ তায়ালা নিজের হিফাজতে শিক্ষা দান করেছেন সেই নবী কে মুর্খ বলতে তোমার ইমানে আঘাত লাগে না??
আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে আপনাকে হিফাজত করুন এই রকমের বেয়াদবি ও ফিতনা থেকে।।
যে নবী কে আল্লাহ তায়ালা নিজের হিফাজতে শিক্ষা দান করেছেন সেই নবী কে মুর্খ বলতে তোমার ইমানে আঘাত লাগে না??
আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে আপনাকে হিফাজত করুন এই রকমের বেয়াদবি ও ফিতনা থেকে।।
No comments:
Post a Comment